হুমায়ূন আহমেদ এর বিখ্যাত ১৫০টি উক্তি

Deal Score0
Deal Score0

হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যের এক ধ্রুবতারা। সাহিত্য জগতে তিনি ছিলেন অনবদ্য, জনপ্রিয়তায় ছিলেন অপ্রতিরোধ্য, প্রকাশকদের কাছে ছিলেন পরম আরাধ্য। তিনি এক বিরলতম সাহিত্যিক যিনি উপন্যাস, নাটক, চলচ্চিত্র ও গানসহ সাহিত্যজগতের যেখানেই হাত দিয়েছেন সেখানেই তার প্রতিভা দেখিয়েছেন।

তাঁর লেখায় ছিল জীবনের সহজ সরল অথচ গভীর গল্প বলার এক অসাধারণ ক্ষমতা। সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, প্রেম, সম্পর্ক, হাসি-কান্না সবকিছু তিনি এমনভাবে ফুটিয়ে তুলতেন, যেন পাঠক নিজের জীবনের গল্পই পড়ছে। তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে বাংলার কোটি সাহিত্য পিপাসুদের হৃদয় জয় করেছেন।

তাঁর সৃষ্ট প্রধান চরিত্রগুলো যেমন হিমু, মিসির আলি, শুভ্র, মাজেদা খালা আজও পাঠকের মনে জীবন্ত। তাঁর গল্পে থাকে এক ধরনের মায়াবী বাস্তবতা, যেখানে দৈনন্দিন জীবনের একদমই সাধারণ ঘটনা গুলোও হয়ে ওঠে অসাধারণ। তার লেখার ভাষা ছিল সহজ, কিন্তু তাতে লুকিয়ে থাকত গভীর দর্শন ও আবেগ।

হুমায়ূন আহমেদের উক্তিগুলো এখনো পাঠকের হৃদয়ে জ্যান্ত। তাঁর লেখা থেকে নেওয়া বিভিন্ন লেখাই অনেকে ব্যবহার করেন ফেসবুক স্ট্যাটাস বা ক্যাপশনে।

Humayun Ahmed quotes, caption, status

হুমায়ূন আহমেদ এর উক্তি


বিবাহ এবং মৃত্যু এই দুই বিশেষ দিনে লতা-পাতা আত্মীয়দের দেখা যায়। সামাজিক মেলামেশা হয়। আন্তরিক আলাপ আলোচনা হয়।হুমায়ূন আহমেদ
একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা
অনেক সময় আমাদের অনেক কিছু ভালো লাগে, কিন্ত কেন ভালো লাগে তা আমরা বুঝতে পারি না। বুঝতে চেষ্টাও করি না।হুমায়ূন আহমেদ
চট করে কারো প্রেমে পড়ে যাওয়া কাজের কথা না। অতি রূপবতীদের কারও প্রেমে পড়তে নেই। অন্যেরা তাদের প্রেমে পড়বে, তা-ই নিয়ম।হুমায়ূন আহমেদ
দেয়াল
যে মানুষ নিঃশব্দে হাসে তাহার বিষয়ে খুব সাবধান। দুই ধরনের মানুষ নিঃশব্দে হাসে- অতি উঁচু স্তরের সাধক এবং অতি নিম্নশ্রেণীর পিশাচ চরিত্রের মানুষ।হুমায়ূন আহমেদ
তোমাদের এই নগরে
যখনই সময় পাবি ছাদে এসে আকাশের তারার দিকে তাকাবি, এতে মন বড় হবে। মনটাকে বড় করতে হবে। ক্ষুদ্র শরীরে আকাশের মতো বিশাল মন ধারণ করতে হবে।হুমায়ূন আহমেদ
ময়ূরাক্ষী
আদর্শ মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। আদর্শ মানুষ ডিসটিল্ড ওয়াটারের মতো - স্বাদহীন। সমাজ পছন্দ করে অনাদর্শ মানুষকে। যারা ডিসটিল্ড ওয়াটার নয় - কোকাকোলা ও পেপসির মতো মিষ্টি কিন্তু ঝাঁঝালো।হুমায়ূন আহমেদ
মানুষের স্বভাব হলো, কেউ যখন ভালোবাসে তখন নানান কর্মকাণ্ড করে সেই ভালোবাসা বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে, আবার কেউ যখন রেগে যায় তখন তার রাগটাও বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছা করে।হুমায়ূন আহমেদ
আঙুল কাটা জগলু
সূর্যোদয় দেখাটা অত্যন্ত জরুরী। এই দৃশ্যটি মানুষকে ভাবতে শিখায়। মন বড় করে।হুমায়ূন আহমেদ
এইসব দিনরাত্রি
পৃথিবীতে অসংখ্য খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু একজনও খারাপ বাবা নেই।হুমায়ূন আহমেদ
বড় বোকামিগুলি বুদ্ধিমান মানুষরাই করে।হুমায়ূন আহমেদ
আঙুল কাটা জগলু
ভালোবাসা আর ঘৃণা আসলে একই জিনিস। একটি মুদ্রার এক পিঠে "ভালোবাসা" আরেক পিঠে লেখা ঘৃণা। প্রেমিক প্রেমিকার সামনে এই মুদ্রা মেঝেতে ঘুরতে থাকে। যাদের প্রেম যতো গভীর তাদের মুদ্রার ঘূর্ণন ততো বেশি। এক সময় ঘূর্ণন থেমে যায় মুদ্রা ধপ করে পড়ে যায়। তখন কারো কারোর ক্ষেত্রে দেখা যায় "ভালোবাসা" লেখা পিঠটা বের হয়েছে, কারো কারো ক্ষেত্রে ঘৃণা বের হয়েছে। কাজেই এই মুদ্রাটি যেন সবসময় ঘুরতে থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ঘূর্ণন কখনো থামানো যাবে না।হুমায়ূন আহমেদ
দাঁড়কাকের সংসার কিংবা মাঝে মাঝে তব দেখা পাই
মানুষের মনের ভাব কখনোই মুখে প্রতিফলিত হয় না। মুখের ওপর সর্বদা পর্দা থাকে। শুধু মানুষ যখন হাসে তখন পর্দা দূরীভূত হয়। হাস্যরত একজন মানুষের মুখে তার মনের ছায়া দেখা যায়।হুমায়ূন আহমেদ
একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা
যখন মানুষের খুব প্রিয় কেউ তাকে অপছন্দ, অবহেলা কিংবা ঘৃণা করে তখন প্রথম প্রথম মানুষ খুব কষ্ট পায় এবং চায় যে সব ঠিক হয়ে যাক । কিছুদিন পর সে সেই প্রিয় ব্যক্তিকে ছাড়া থাকতে শিখে যায়। আর অনেকদিন পরে সে আগের চেয়েও অনেকবেশী খুশি থাকে যখন সে বুঝতে পারে যে কারো ভালবাসায় জীবনে অনেক কিছুই আসে যায় কিন্তু কারো অবহেলায় সত্যিই কিছু আসে যায় না।হুমায়ূন আহমেদ
সূরা বনি ইসরাইলে আল্লাহ্‌পাক বলেছেন - 'আমি প্রত্যেক মানুষের ভাগ্য তার গলায় হারের মত পরিয়ে দিয়েছি।' আমরা সবাই গলায় অদৃশ্য হার নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। কার হার কেমন কেউ জানে না।হুমায়ূন আহমেদ
গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায় প্রায়ই। ছাড়া ছাড়া অর্থহীন স্বপ্ন দেখতে দেখতে হঠাৎ জেগে উঠি। পরিচিত বিছানায় শুয়ে আছি, এই ধারণা মনে আসতেও সময় লাগে। মাথার কাছের জানালা মনে হয় সরে গেছে পায়ের কাছে। তৃষ্ণা বোধ হয়। বিছানার পাশে পানির বোতল। হাত বাড়িয়ে টেনে নিলেই হয়, অথচ ইচ্ছে হয় না। কোনো কোনো রাতে অপূর্ব জোছনা হয়। সারা ঘর নরম আলোয় ভাসতে থাকে। ভাবি, একা একা বেড়ালে বেশ হতো। আবার চাদর মুড়ি দিয়ে নিজেকে গুটিয়ে ফেলি। যেন বাইরের উথাল পাথাল চাঁদের আলোর সঙ্গে আমার কোনো যোগ নেই।হুমায়ূন আহমেদ
শঙ্খনীল কারাগার
কৌতুহল আমাদের সবারই আছে, কিন্ত কৌতুহল মেটানোর জন্যে প্রয়োজনীয় পরিশ্রমটি আমরা করি না। করতে চাই না।হুমায়ূন আহমেদ
আলোটুকু তোমায় দিলাম। ছায়া থাক আমার কাছে।হুমায়ূন আহমেদ
বহুব্রীহি
I love you যত সহজে বলা যায়- "আমি তোমাকে ভালোবাসি" ততো সহজে বলা যায় না।হুমায়ূন আহমেদ
কবি
দিতে পার একশ' ফানুস এনে
আজন্ম সলজ্জ সাধ,
একদিন আকাশে কিছু ফানুস উড়াই।
হুমায়ূন আহমেদ
শঙ্খনীল কারাগার
সারা জীবন পাশাপাশি থেকেও এক সময় একজন অন্যজনকে চিনতে পারে না। আবার এমনও হয়, এক পলকের দেখায় একে অন্যকে চিনে ফেলে।হুমায়ূন আহমেদ
সত্য কথাগুলো সব সময় বক্তৃতার মতো শোনায়, মিথ্যাগুলো শোনায় কবিতার মত।হুমায়ূন আহমেদ
ভালবাসার মানুষের সাথে বিয়ে না হওয়াটাই বোধ হয় ভাল। বিয়ে হলে মানুষটা থাকে ভালবাসা থাকে না। আর যদি বিয়ে না হয় তাহলে হয়ত বা ভালবাসাটা থাকে, শুধু মানুষটাই থাকে না। মানুষ এবং ভালবাসা এই দুয়ের মধ্যে ভালবাসাই হয়ত বেশি প্রিয়।হুমায়ূন আহমেদ
কোথাও কেউ নেই
রিকশায় চড়ায় একটা রাজকীয় ব্যাপার আছে। মাথা সামান্য উচু করলেই আকাশ দেখতে দেখতে যাওয়া যায়।হুমায়ূন আহমেদ
কবি
বেশিরভাগ রূপবতী মেয়ে নকল হাসি হাসে। হাসার সময় ঢং করার চেষ্টা করে। তাদের হাসি হায়েনার হাসির মতো হয়ে যায়।হুমায়ূন আহমেদ
দিঘির জলে কার ছায়া গো
আমি কখনো অতিরিক্ত কিছুদিন বাঁচার জন্য সিগারেটের আনন্দ ছাড়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। আমি ভেবে রেখেছিলাম ডাক্তারকে বলব, আমি একজন লেখক। নিকোটিনের বিষে আমার শরীরের প্রতিটি কোষ অভ্যস্ত। তোমরা আমার চিকিৎসা করো, কিন্তু আমি সিগারেট ছাড়ব না। তাহলে কেন ছাড়লাম? পুত্র নিনিত হামাগুড়ি থেকে হাঁটা শিখেছে। বিষয়টা পুরোপুরি রপ্ত করতে পারেনি। দু-এক পা হেঁটেই ধুম করে পড়ে যায়। ব্যথা পেয়ে কাঁদে। একদিন বসে আছি। টিভিতে খবর দেখছি। হঠাৎ চোখ গেল নিনিতের দিকে। সে হামাগুড়ি পজিশন থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে। হেঁটে হেঁটে এগিয়ে আসছে আমার দিকে। তার ছোট্ট শরীর টলমল করছে। যেকোনো সময় পড়ে যাবে এমন অবস্থা। আমি ডান হাত তার দিকে বাড়িয়ে দিতেই সে হাঁটা বাদ দিয়ে দৌড়ে হাতের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বিশ্বজয়ের ভঙ্গিতে হাসল। তখনই মনে হলো, এই ছেলেটির সঙ্গে আরও কিছুদিন আমার থাকা উচিত। সিগারেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত সেই মুহূর্তেই নিয়ে নিলাম।হুমায়ূন আহমেদ
শিকল দিয়ে কাউকেই বেঁধে রাখা হয় না। তারপরেও সব মানুষই কোনো না কোনো সময় অনুভব করে তার হাত পায়ে কঠিন শিকল। শিকল ভাঙ্গতে গিয়ে সংসার বিরাগী গভীর রাতে গৃহত্যাগ করে। ভাবে মুক্তি পাওয়া গেল। দশতলা বাড়ির ছাদ থেকে গৃহী মানুষ লাফিয়ে পরে ফুটপাতে। এরা ক্ষণিকের জন্য শিকল ভাঙার তৃপ্তি পায়।হুমায়ূন আহমেদ
মৃন্ময়ী
পৃথিবীতে আনন্দ এবং দুঃখ সব সময় থাকবে সমান সমান। বিজ্ঞানের ভাষায়- Conservation of আনন্দ। একজন কেউ চরম আনন্দ পেলে, অন্য জনকে চরম দুঃখ পেতে হবে।হুমায়ূন আহমেদ
আজ হিমুর বিয়ে
অল্প বয়সের ভালোবাসা অন্ধ গন্ডারের মত। শুধুই একদিকে যায়। যুক্তি দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, আদর দিয়ে এই গন্ডারকে সামলানো যায় না।হুমায়ূন আহমেদ
চাঁদের বিশালতা মানুষের মাঝেও আছে, চাঁদ এক জীবনে বারবার ফিরে আসে... ঠিক তেমন মানুষ প্রিয় বা অপ্রিয় যেই হোক, একবার চলে গেলে আবার ফিরে আসে।হুমায়ূন আহমেদ
মেয়েদের অনেক গুণের মধ্যে বড় গুণ হলো এরা খুব সুন্দর করে চিঠি লিখতে পারে। কথাবার্তায় নিতান্ত এলোমেলো মেয়েও চিঠি লেখায় গোছানো। মেয়েদের চিঠিতে আরেকটা ব্যাপার থাকে - বিষাদময়তা। নিতান্ত আনন্দের সংবাদ দিয়ে লেখা চিঠির মধ্যেও তারা জানি কী করে সামান্য হলেও দুঃখ মিশিয়ে দেয়। কাজটা যে তারা ইচ্ছা করে করে তা না। প্রকৃতি তাদের চরিত্রে যে বিষাদময়তা দিয়ে রেখেছে তাই হয়তো চিঠিতে উঠে আসে।হুমায়ূন আহমেদ
সে আসে ধীরে
কেও কারও মত হতে পারে না। সবাই হয় তার নিজের মত। তুমি হাজার চেষ্টা করেও তোমার চাচার বা বাবার মত হতে পারবে না। সব মানুষই আলাদা।হুমায়ূন আহমেদ
অপেক্ষা
রূপবতীদের সব অভদ্রতা ক্ষমা করা যায়। এরা অভদ্র হবে এটাই স্বাভাবিক। এরা ভদ্র হলে অস্বস্তি লাগে।হুমায়ূন আহমেদ
যে মানব সন্তান ক্ষুদ্র কামনা জয় করতে পারে সে বৃহৎ কামনাও জয় করতে পারে।হুমায়ূন আহমেদ
দরজার ওপাশে
মানুষই একমাত্র প্রাণী, যে পুরোপুরি সফল জীবন পার করার পরও আফসোস নিয়ে মৃত্যুবরণ করে।হুমায়ূন আহমেদ
দেয়াল
না চাইতেই যা পাওয়া যায় তা তো সব সময়ই মূল্যহীন।হুমায়ূন আহমেদ
অচিনপুর
যে জোছনা দেখে কবিরা বলবেন ―কি আশ্চর্য রূপার থালার মত চাঁদ। আমি সিদ্ধার্থের মত গৃহত্যাগী জোছনার জন্য বসে আছি। যে জোছনা দেখা মাত্র গৃহের সমস্ত দরজা খুলে যাবে ―ঘরের ভেতর ঢুকে পড়বে বিস্তৃত প্রান্তর। প্রান্তরে হাঁটব, হাঁটব আর হাঁটব ―পূর্ণিমার চাঁদ স্থির হয়ে থাকবে মধ্য আকাশে। চারদিক থেকে বিবিধ কন্ঠ ডাকবে ― আয় আয় আয়।হুমায়ূন আহমেদ
কবি
গল্প-উপন্যাস হলো অল্পবয়েসী মেয়েদের মাথা খারাপের মন্ত্র।হুমায়ূন আহমেদ
দেয়াল
প্রিয় মুখ কিছুদিন পরপর দেখতে হয়। মানুষের মস্তিষ্ক অপ্রিয়জনদের ছবি সুন্দর করে সাজিয়ে রাখে। প্রিয়জনদের ছবি কোনো এক বিচিত্র কারণে সাজায় না। যে জন্যে চোখ বন্ধ করে প্রিয়জনের চেহারা কখনোই মনে করা যায় না।হুমায়ূন আহমেদ
হিমু
মানুষকে ঘৃণা করার অপরাধে কখনো কাউকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়নি, অথচ মানুষকে ভালোবাসার অপরাধে অতীতে অনেককেই হত্যা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও হয়তো হবে।হুমায়ূন আহমেদ
সম্রাট
হাতে মশাল থাকলেই আগুন জ্বালাতে ইচ্ছা করে। হাতে তলোয়ার থাকলে কোপ বসাতে ইচ্ছা করে। বন্দুক থাকলে ইচ্ছা করে গুলি করতে। মানবচরিত্র বড়ই অদ্ভুত! আচ্ছা কারোর হাতভর্তি ফুল দিয়ে দিলে সে কী করবে? ফুল বিলাতে শুরু করবে?হুমায়ূন আহমেদ
আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমাদের যখন গুছিয়ে কথা বলা দরকার তখন টেলিগ্রাফের ভাষায় কথা বলি। আর যখন সার সংক্ষেপ বলা দরকার তখন পাঁচ শ পৃষ্ঠার উপন্যাস শুরু করি।হুমায়ূন আহমেদ
পুফি
কিছু কিছু ব্যাক্তিগত দুঃখ আছে, যা স্পর্শ করার অধিকার কারোরই নেই।হুমায়ূন আহমেদ
একজন মানুষকে সত্যিকারভাবে জানার উপায় হচ্ছে তার স্বপ্নটা জানা।হুমায়ূন আহমেদ
কবি
মাঝে মাঝে বৃষ্টি নামে। একঘেয়ে কান্নার সুরের মত সে-শব্দ। আমি কান পেতে শুনি। বাতাসে জামগাছের পাতায় সরসর শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হা-হা করে ওঠে। আদিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতায় কী বিপুল বিষন্নতাই না অনুভব করি! জানালার ওপাশের অন্ধকার থেকে আমার সঙ্গীরা আমায় ডাকে। একদিন যাদের সঙ্গ পেয়ে আজ নিসঙ্গতায় ডুবেছি।হুমায়ূন আহমেদ
শঙ্খনীল কারাগার
মিথ্যা হলো শয়তানের বিয়ের মন্ত্র। মিথ্যা বললেই শয়তানের বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়া মানেই সন্তান-সন্ততি হওয়া। একটা মিথ্যার পর আরো অনেকগুলি মিথ্যা বলতে হয় এই কারণেই।পরের মিথ্যাগুলি শয়তানের সন্তান।হুমায়ূন আহমেদ
এই মেঘ, রৌদ্রছায়া
সব পাখি জোড়ায় জোড়ায় ওড়ে। পক্ষীকুলে শুধুমাত্র চিলকেই নিঃসঙ্গ উড়তে দেখা যায়। নিঃসঙ্গতার আনন্দের সাথে এই পাখিটার হয়তো বা পরিচয় আছে।হুমায়ূন আহমেদ
বৃষ্টি ও মেঘমালা
কিছু মানুষ ধরেই নিয়েছে তারা যা ভাবছে তাই ঠিক। তাদের জগতটাই একমাত্র সত্যি জগত। এরা রহস্য খুঁজবে না। এরা স্বপ্ন দেখবে না।হুমায়ূন আহমেদ
ময়ূরাক্ষী
তুমি আমার জন্য দুফোঁটা চোখের জল ফেলেছো, তার প্রতিদানে আমি জনম জনম কাঁদিব।হুমায়ূন আহমেদ
তেতুল বনে জোছনা
মানুষের সৌন্দর্য আশেপাশের সবকিছু নিয়ে। মানুষ কখনো একা একা সুন্দর হয় না।হুমায়ূন আহমেদ
কবি
এই পৃথিবী, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কোনোটাই স্থির না। সবকিছু প্রচণ্ড গতিময়। ইলেক্ট্রন ঘুরছে নিউক্লিয়াসের চারদিকে, নিউক্লিয়াস ঘুরছে, চন্দ্র-সূর্য-গ্রহ-নক্ষত্র ঘুরছে। ছায়াপথ ছুটে ছুটে যাচ্ছে। শুধু মানুষ হাঁটা বন্ধ করে দিয়েছে।হুমায়ূন আহমেদ
দরজার ওপাশে
মানুষের সঙ্গে গাছের অনেক মিল আছে। সবচেয়ে বড় মিল হলো, গাছের মত মানুষেরও শিকড় আছে। শিকড় উপড়ে ফেললে গাছের মৃত্যু হয়, মানুষেরও এক ধরনের মৃত্যু হয়। মানুষের নিয়তি হচ্ছে তাকে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মৃত্যুর ভেতর দিয়ে অগ্রসর হতে হয় চুড়ান্ত মৃত্যুর দিকে।হুমায়ূন আহমেদ
গল্প উপন্যাসের নায়ক-নায়িকাদের সুখ-দুঃখে যারা কাতর, তারা সাধারণত নিজেদের সুখ দুঃখের ব্যাপারে উদাসীন হয়।হুমায়ূন আহমেদ
এইসব দিনরাত্রি
মানুষ যখন হাসে তখন তার সঙ্গে সমস্ত পৃথিবী হাসে। কিন্তু সে যখন কাঁদে, তার সঙ্গে আর কেউ কাঁদে না। কাঁদতে হয় একা একা।হুমায়ূন আহমেদ
তোমাকে
বন্ধুত্ব তখনই গাঢ় হয় যখন কেউ কাউকে চিনে না।হুমায়ূন আহমেদ
হিমু এবং হার্ভার্ড Ph.D. বল্টু ভাই
প্রেমে পড়া মানে নির্ভরশীল হয়ে পড়া। তুমি যার প্রেমে পড়বে সে তোমার জগতের একটা বিরাট অংশ দখল করে নেবে। যদি কোনো কারণে সে তোমাকে ছেড়ে চলে যায় তবে সে তোমার জগতের ঐ বিরাট অংশটাও নিয়ে যাবে। তুমি হয়ে পড়বে শূণ্য জগতের বাসিন্দা।হুমায়ূন আহমেদ
মেয়েরা ভয়ঙ্কর দুর্যোগেও সাজ ঠিক রাখতে ভোলে না।হুমায়ূন আহমেদ
হিমুর আছে জল
ভাসিয়ে দেবার প্রবণতা প্রকৃতির ভেতর আছে। সে জোছনা দিয়ে ভাসিয়ে দেয়, বৃষ্টি দিয়ে ভাসিয়ে দেয়, তুষারপাত দিয়ে ভাসিয়ে দেয়। আবার প্রবল প্রেম, প্রবল বেদনা দিয়েও তার সৃষ্টজগৎকে ভাসিয়ে দেয়।হুমায়ূন আহমেদ
হরতন ইশকাপন
পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে। এক ধরনের মানুষ রাগ প্রকাশ করতে পারে, খুশি প্রকাশ করতে পারে না। আরেক ধরনের মানুষ খুশি প্রকাশ করতে পারে, রাগ প্রকাশ করতে পারে না।হুমায়ূন আহমেদ
রাত্রি কখনো সূর্যকে পায় না। অবশ্য তাতে তার কোনো ক্ষতি নেই, কেননা তার আছে অনন্ত নক্ষত্রবীথি।হুমায়ূন আহমেদ
দিনের শেষে
যে ভালোবাসা না চাইতে পাওয়া যায়, তার প্রতি কোনো মোহ থাকে না।হুমায়ূন আহমেদ
রাজা যায়, রাজা আসে। প্রজাও যায়, নতুন প্রজা আসে। কিছুই টিকে থাকে না। ক্ষুধার্ত সময় সবকিছু গিলে ফেলে, তবে গল্প গিলতে পারে না। গল্প থেকে যায়।হুমায়ূন আহমেদ
বাদশাহ নামদার
হাসিতে খুব সহজেই মানুষকে চেনা যায়। সব মানুষ একই ভঙ্গিতে কাঁদে কিন্তু হাসার সময় একেক জন একেক রকম করে হাসে।হুমায়ূন আহমেদ
ময়ূরাক্ষী
কঠিন মানসিক যন্ত্রণায় কাউকে দগ্ধ করার আনন্দের কাছে সব আনন্দই ফিকে।হুমায়ূন আহমেদ
ময়ূরাক্ষী
জোছনা দেখতে দেখতে, আমার হঠাৎ মনে হলো, প্রকৃতির কাছে কিছু চাইতে নেই, কারণ প্রকৃতি মানুষের কোনো ইচ্ছাই অপূর্ণ রাখে না।হুমায়ূন আহমেদ
দরজার ওপাশে
দিনকাল পাল্টে গেছে, এখন আর মানুষ আগের মতো নাই। মওলানা ধরনের মানুষের দিকে এখন আর আগের মতো ভয়-মিশ্রিত শ্রদ্ধার চোখে কেউ তাকায় না। মওলানাও যে বিবেচনায় রাখার মতো একজন, কেউ তাও বোধহয় মনে করে না। ছল্টুফল্টু ভাবে।হুমায়ূন আহমেদ
এই মেঘ, রৌদ্রছায়া
বাঙ্গালীকে বেশি প্রশংসা করতে নেই। প্রশংসা করলেই বাঙালি এক লাফে আকাশে উঠে যায়। আকাশে উঠে গেলেও ক্ষতি ছিল না- আকাশ থেকে থুথু ফেলা শুরু করে।হুমায়ূন আহমেদ
কুটু মিয়া
বিপদ যখন আসে একটার পর একটা আসে। বিপদরা পাঁচ ভাইবোন। এদের মধ্যে খুব মিল। এই ভাইবোনরা কখনো একা কারো কাছে যায় না। প্রথম একজন যায়, তারপর তার অন্য ভাইবোনরা উপস্থিত হয়।হুমায়ূন আহমেদ
এই মেঘ, রৌদ্রছায়া
যে জিনিস চোখের সামনে থাকে তাকে আমরা ভুলে যাই। যে ভালবাসা সব সময় আমাদের ঘিরে রাখে তার কথা আমাদের মনে থাকে না। মনে থাকে হঠাৎ আসা ভালবাসার কথা।হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন এমন এক স্রষ্টা যিনি গল্পের মাধ্যমে মানুষের অন্তর ছুঁতে পারতেন অনায়াসে। তাঁর সৃষ্ট বিভিন্ন চরিত্র, সংলাপ, এবং জীবনঘনিষ্ঠ কাহিনিগুলো পাঠকের মনে আজও একইভাবে জায়গা করে আছে।

তিনি নিজেকে কখনো উঁচু জাতের সাহিত্যিক প্রমাণে ব্যস্ত ছিলেন না বরং বাঙালির জীবনের আবেগ ও অনুভূতির যথাযথ ব্যবহার করে তাদের ড্রয়িং রুমে পৌঁছেছিলেন। তাঁর লেখা, নাটক ও চলচ্চিত্র প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বিনোদন দিয়েছে, চিন্তায় উদ্বুদ্ধ করেছে।

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বাংলা সাহিত্যের আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যা চিরকাল অমলিন থাকবে পাঠকের হৃদয়ে।

JofolaAdmin
We will be happy to hear your thoughts

Leave a reply

Jofola.com
Logo